পুনর্নভা একটি ঘন শাখাযুক্ত লতানো উদ্ভিদ, মাটিতেবেয়ে বেয়ে বাড়ে। ডাঁটা লালচে, রসালো নয় বরং অপেক্ষাকৃত শক্ত। ডাঁটার পর্ব সাধারণত ১.৫ সে.মি. থেকে ৫ সে.মি. পর্যন্ত লম্বা হয়। উপর্যিভাগ অনুজ্জ্বল সবুজ। নিচের দিকটা সাদাটে। পুনর্নবার শিকড় মোটা, মূল উপরাংশ থেকে নতুন লতা গজিয়ে ছড়িয়ে পড়ে এজন্য এটির নাম পুনর্নভা। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে লম্বা বোঁটায় গুচ্ছাকারে ছোট ছোট নীলাভ ফুল ধরে। ফল পাঁচটি শিরযুক্ত ছোট ছোট দানাদার।
বিস্তৃতিঃ
বাংলাদেশের সর্বত্র এ গাছে জন্মায়। বেলে বা দো-আঁশ মাটিতে দেড়/দুই হাত ব্যাস নিয়ে এক একটা গাছ দেখা যায়।
ঔষধি গুণঃ
১। সুতাকৃমিতে (Thread worms) সব বয়েসের লোকই বিব্রত বোধ করেন। এক্ষেত্রে শুকনো পুনর্নভা মূলসহ ৬/৭ গ্রাম ৩ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে নিয়ে তা ৭/৮ দিন খেলে উপকার পাওয়া যাবে। পুনর্নভা কাঁচ হলে মাত্রা দ্বিগুণ এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এই মাত্রা অর্ধেক।
২। হঠাৎ সমস্ত গায়ে চাকা চাকা হয়ে ফুলে ওঠে, চুলকায়; গরম সেক দিলে আরাম বোধ হয়। এটি শীত পিত্তের (Urticaria) কারণে হয়। এক্ষেত্রে মূলসহ ১৫/২০ গ্রাম পুনর্নভা ৪কাপ পানিতে সিদ্ধ করে পূর্বের নিয়মে ক্বাথ তৈরি করে কিছুদিন খেলে এটি উপশম হয়।
৩। কিডনির সমস্যা হলে সাধারণত হাত-পা বা অনেক ক্ষেত্রে সর্বাঙ্গ ফুলে যায়। এক্ষেত্রে ১০/১৫ গ্রাম পাতার গুঁড়া ৩ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে আধা কাপ ক্বাথ করে সেই ক্বাথ দিয়ে আটা মেখে রুটি তৈরি করে খেতে হবে। যদি কাঁচা গাছের রস পাওয়া যায় তবে ৭/৮ চা চামচ রস নিয়ে রুটি তেরি করতে হবে।
৪। বায়ুবিকারগ্রস্ত হয়ে অনিদ্রা (Insomnia) হলে মূলসহ ১৫/২০ গ্রাম পুনর্নভা দিয়ে ৪ কাপ পানিতে মিশিয়ে ১ কাপ ক্বাথ তৈরি করে প্রতিদিন সকাল-বিকাল দুবার করে খেলে কয়েকদিনের মধ্যে বায়ু স্বাভাবক অবস্থায় ফিরে আসবে এবং অনিদ্রা দূর হবে।
৫। যৌবনে শুক্র তারল্য দেখা দিলে ৮ চা চামচ পুনর্নভার রস একটু গরম করে সকাল-বিকাল কয়েকদিন খেলে ঐ অসুবিধা দূর হবে।
৬। মদের নেশায় বেতাল অবস্থা হলে ৭/৮ চামচ পুনর্নভার রসে সমপরিমাণ দুধ ও ৩/৪ চামচ গাওয়া ঘি মিশিয়ে খেতে দিলে নেশা কেটে যাবে।
৭। পুরোনো কাশি, কিন্তু কফ ওঠে না। এক্ষেত্রে ৪ চা চামচ রস গরম করে সকাল-বিকাল কয়েকদিন খেলে ভালো হয়ে যায়।
৮। ভিমরুল, বোলতা বা বিষাক্ত কীটে হুল পোটালে সেখানে পুনর্নভার রস লাগিয়ে দিলে জ্বালার তীব্রতা কমে যাবে।
তথ্যসূত্রঃ
