আর্য সম্পর্কে প্রচলিত মতবাদ
পর্ব – ১/৫ :
প্রচলিত তথ্য অনুযায়ী আর্য জনগোষ্ঠী হলো ককেসিয় পার্বত্য অঞ্চল থেকে আসা গৌরবর্ণ, উন্নত নাক, নীল চোখের মানুষ যারা খ্রী:পূ: ১৫০০ শতকে ভারতবর্ষে আক্রমণ করে। তারা ঘোড়ার ব্যবহার জানতো, ঘোড়ায় টানা রথ তাদের প্রধান যোগাযোগের ব্যবস্থা ছিল। তারা লোহার ব্যবহার জানতো এবং একইসঙ্গে তারা বেদ নিয়ে অখন্ড ভারতবর্ষে প্রবেশ করেছিল আর সংস্কৃত তাদের ভাষা ছিল।
আর্যদের আক্রমণে হরপ্পা মহেঞ্জোদারোর উন্নত নগর সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যায়। কারণ হরপ্পা সভ্যতার মানুষ তাম্র ও ব্রোঞ্জের ব্যবহার জানলেও লোহার ব্যবহার জানতো না। হরপ্পা সভ্যতার মানুষের গায়ের রঙ কালো ছিল। এরা আর্যদের কাছে পরাজিত হয়ে বিন্ধ্য পর্বত পেরিয়ে দাক্ষিণাত্যে চলে যায় ও কালক্রমে এদের থেকেই দ্রাবিড় জনজাতির উৎপত্তি হয়।
বলা হয়ে থাকে যে, আর্যরা ইউরোপ থেকে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এক অংশ ইরান বা পারস্যে যায়, একটি অংশ পশ্চিম ইউরোপে যায় আর একটি অংশ দক্ষিণে হিন্দুকুশ পর্বত অতিক্রম করে ভারতীয় উপমহাদেশে প্রবেশ করে। তাই সংস্কৃত, পারসী ও ইউরোপীয় ভাষার আকারগত মিল খুঁজে পাওয়া যায়। প্রাচীন এই ভাষার মিলের জন্য এদের এক ভাষা গোষ্ঠীর মধ্যে রাখা হয় যা প্রোটো ইন্ডো ইউরোপীয় ভাষা গোষ্ঠী হিসাবে পরিচিত।
মূলত, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ প্রতিষ্ঠা করার এটি ছিল এক ঘৃণিত ষড়যন্ত্র। ইতিহাসের বিকৃতি করা হয়। সাহায্য হিসাবে বেদের ইংরেজি অনুবাদ করা হয় আর বলা বাহুল্য যে, বৈদিক সাহিত্যের অর্থও পরিবর্তন করা হয় তাদের সুবিধামত।
তৎকালীন ভারতীয়দের অজ্ঞতা, অজ্ঞানতা এবং বিদেশীদের উপর অন্ধ ভরসা এই কাজকে সহজ করে দেয়। আসলে উপনিবেশ স্থাপনের মূল ভিত্তিই তো পরাজিত জাতিকে হেয় করা, তাদের সংস্কৃতিকে হেয় করা। আর্যরা বহিরাগত এই তত্ত্বের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি বা প্রামাণিকতা ছিল না।
তাহলে কিভাবে এই তত্ত্ব সৃষ্টি হলো ? পরবর্তী অংশে না হয় সেটাই আলোচনা করা যাবে।
